সকাল দশটা নাগাদ পোস্ট ম্যান আসে। মনামি জানে সে কথা। তবে তাকে চিঠি লেখার কেউ নেই আর। মা যতদিন ছিলেন, মাসে একটা করে চিঠি অন্তত সে পেত। এখন টেলিফোনে তেমন পয়সা
লাগেনা। ওকে ফোন করলে, ভাই যে রাগারাগি করবে তাও মনে হয়না -
তাও মায়ের যে কি সংকোচ ছিলো, মনামি কিছুতেই বুঝতে পারেনা।
অবশ্য ওর নিজের সংসারেও তো ও খানিকটা সংকোচ করেই থাকে। হাত খুলে খরচা করতে পারেনা।
হঠাৎ করে দোকানে গিয়ে কোন পছন্দসই জামা কিনে ফেলল তো সমীর একটু গম্ভীর হয়ে বলবে,
- তোমার তো আলমারী ভর্তি জামা কাপড়, আরও লাগবে?
আর শাড়ি কিনলে তো কথাই নেই, বলবে,
- বছরে কবার তুমি শাড়ি পর বলোতো? তোমাদের মেয়েদের শাড়ি নিয়ে একটা obsession আছে
মনে হয়। দেশে থাকলেও না হয় একটা কথা ছিলো। একটু বুঝে শুনে চলতে শেখো।
সত্যি boyfriend সমীর আর husband সমীর যেন
আলাদা মানুষ। অথচ মনামি তো সেই সতের বছর বয়েস থেকেই ওকে চেনে। বন্ধুর দিদির বিয়েতে
নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে আলাপ। সেই আলাপ তারপর দাঁড়ালো প্রলাপে। কলেজের ক্লাস কেটে
সিনেমা দেখা, রেস্তোঁরায় খাওয়া। সমীর বাইরে চলে এলো, একেবারে নিউ ইয়র্ক। তার পর পাক্কা তিন বছর ধরে শুধু চিঠি লেখালেখি। মনামি
কত জনের কাছ থেকেই তো পেয়েছে কত ইশারা ইঙ্গিত - কেউ আবার বেশী সাহস দেখিয়ে সরাসরি
প্রস্তাবও করেছে। না - মনামির মন টলেনি। ও সমীরের প্রতি একনিষ্ঠ থেকেছে। সমীরও
তাই। নইলে বিদেশ বিভুঁয়ে, একা একা - পা পিছলোতেই পারে। না
ওরা দুজনেই দুজনের ভালোবাসার মর্যাদা রেখেছিল।
ইদানীং ওর সংকোচটা আর
একটু বেড়েছে, কারণ আজ সাত মাস হলো
মনামির চাকরি নেই। আজ সকালে খানিকটা রান্না করে তারপর স্নান সেরে ও যতক্ষণে চিঠির
বাক্স দেখতে গেল ততক্ষণে প্রায় বেলা একটা। প্রায় মাস দুয়েক আগে একটা কম্পানিতে interview দিয়েছিলো,
সেখান থেকেই চিঠি এসেছে। মনামি ধীরে সুস্থে খাম খোলে, সেইতো ওদের বাঁধা গৎ। এই মুহূর্তে কোন opening নেই,
ভবিষ্যতে হলে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।
কিন্তু না, নিজের চোখকে বিশ্বাস
করতে পারছেনা। এ তো appointment এর চিঠি - আর মাইনে পত্রও খুবই ভালো। প্রথম তিন মাস training, তার পর পাকা চাকরি।
মনামির এত আনন্দ হচ্ছিল
যে মনে হলো তক্ষুনি সমীরকে অফিসে ফোন করে। কি ভেবে নিজেকে আটকালো। নাঃ - সুখবরটা সমীর বাড়ি ফিরলেই দেবে এখন। তাই হলো -
সমীর এত খুশী হলো যে বাড়িতে রান্না থাকা স্বত্তেও ওরা বাইরে চিনে রেস্তোঁরায় গেল celebrate করতে।
পরের সোমবার থেকে মনামি
কাজে যোগ দিল। এই group টা খুব বড় নয় -
মোটে বারো তেরো জন। তার মধ্যে দুজন আবার বাঙালী। এক সপ্তাহের মধ্যে মনামি বুঝে
ফেলল যে ওর বস মাইক আর এক বাঙালি সহকর্মী প্রণবকে ওর খুব ভালো লেগে গেছে। মাইক
কাজের লোক হলেও বেশ easy going আর প্রণব তো অপূর্ব ছেলে - সব
সময় ওকে প্রচুর সাহায্য করে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে মনামির টেবিলে এসে ফিসফিস করে
বাংলায় আড্ডা মারে। আরেক বাঙালি - মি: ঘোষ, একটু বয়স্ক, সেলসের লোক বলে সবসময়ই প্রায় ট্যুর করেন। তিনিও খুব হাসিখুশি দিলদরিয়া
মানুষ। কিন্তু মনামি আর প্রণব প্রায় একই বয়সী বলে ওদের আড্ডাটা জমে বেশী। ওরা
দুজনেই কলকাতায় বড় হয়েছে - একই গান শুনে, একই বই পড়ে,
একই সিনেমা দেখে। তবে প্রণব যাদবপুর আর মনামি লেডি ব্রেবোর্ন।
অফিসের ক্যাফেটেরিয়ায়
লান্চ খেতে খেতে অনেক গল্প হয়। প্রণব ওর বউ জেনিফারকে নিয়ে বেশ কয়েকবার মনামিদের
বাড়ি ডিনারে এসেছে। জেনিফারের মা বাবা থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। ও একমাত্র মেয়ে - মা বাবার বয়েস হয়েছে। মায়ের শরীর খারাপ হওয়াতে সে চলে গেল অস্ট্রেলিয়া। প্রণব একা
পড়ে যাওয়াতে মনামিদের বাড়ি তার যাতায়াত আরও বেড়ে গেল। দেখা গেল সমীরও প্রণবের
সঙ্গ বেশ পছন্দ করছে। এখন মনামি
আর সমীরের হাত ধরে প্রণব এখানকার বাঙালি সমাজেও যাতায়াত শুরু করে বেশ জনপ্রিয় হয়ে
উঠেছে।
একদিন অফিসে প্রণব
মনামির ডেস্কে এসে ওকে ডাক দিয়ে বলল -
- হেই মন্ - একটা বেজে গেল, কখন খেতে যাবে?
আরে এ ছোকরা যে আবার ওকে মন্
বলে ডাকতে শুরু করেছে!
মনামি হেসে বলে -
- ও আমি তাহলে তোমাকে প্রণ বলে ডাকি, কি বলো?
- প্রণ, চিংড়ি, কুচো চিংড়ি, গলদা চিংড়ি যা খুশী ডাকতে পারো - তোমার সাত খুন মাফ্।
- তাই নাকি! বেশ তাহলে ভেবে দেখি।
সেদিন খেতে খেতে মনামি বারবার কেমন যেন অন্যমনস্ক হয়ে যেতে লাগলো। প্রণবের
হঠাৎ এই অতি- অন্তরঙ্গতা ওকে একটা না জানা অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিচ্ছিলো। তারপর
যত দিন যেতে লাগলো প্রণব যেন বেশ একটু বাড়াবাড়ি করতে শুরু করলো। যেমন, সকলের সামনেই
ওর হাত ধরে টানাটানি। মাসের শেষ শুক্রবার গ্রুপের সকলে মিলে লান্চ খেতে যাওয়ার
রেওয়াজ। সেবার মনামির একটা ডেড-লাইন থাকায় ও যেই বলেছে যাবেনা, অমনি প্রণব বলে বসলো যে তারও কাজের চাপ আছে, সেও
যেতে পারবেনা।
এরা খুবই ভদ্র, তাই সামনা সামনি কেউ কিছু বলেনা, কিন্তু
মনামির মনে হল আড়ালে কিছু কথা উঠছে। কফি রুম, ক্যাফেটেরিয়া - মনামি
যেখানেই যায়, প্রণব অমনি তার পিছুপিছু সেখানেই হাজির। এক
একবার মনে করে এই চাকরিটা ছেড়েই দেবে। কিন্তু এ বাজারে এত ভালো চাকরি ও কোথায় পাবে?
একদিন মনামি ওর অস্বস্তির কথা সমীরকে বলেই ফেললো।
- জানো, প্রণব যেন
আমাকে একটু বেশী বেশী attention দিচ্ছে আজকাল।
- আজকাল কেন, ওতো বরাবরই
তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আরও রেঁধে বেড়ে ভালোমন্দ খাওয়াও!
- বা রে রেঁধে খাওয়ালেই বুঝি প্রেমে পড়ে যেতে হয় ? তুমি যখন একা থাকতে, তখন মনিকা বৌদি তো কতবার
তোমায় ডেকে খাওয়াতেন, তুমি কি বৌদির প্রেমে পড়ে
গিয়েছিলে নাকি?
- পড়িনি যে তা তোমায় কে বললো!
- যাঃ সবসময় ইয়ার্কি ভালো লাগেনা।
- তাহলে ওকে avoid করে চলো।
- সেটাই তো problem - একই জায়গায় কাজ করি।
- তাহলে একদিন বাড়িতে ডেকে ভাইফোঁটা দিয়ে দাও।
মনামি হেসে ফেলে, বলে -
- সেই, আর তো কোন
উপায় দেখছিনা।
মনামি আরও কিছু বলতে গেল, কিন্তু সমীরের ততক্ষণে নাক ডাকা শুরু হয়ে গেছে। আশ্চর্য
লোক বাবা - কোন কিছু যদি seriously নেয়!
অফিসে প্রণব মনামিকে বলে -
- কি ব্যাপার তোমার - আজকাল এত গম্ভীর কেন? বরের সংগে ঝগড়া চলছে নাকি? ক্যাফেতেও আজকাল
খেতে যাওনা! নাকি আমাকে এড়িয়ে চলছো!
- খুব চাপ যাচ্ছে।
মনামি আরও গম্ভীর হওয়ার চেষ্টা করে।
- ওক্কে বস্। আমি ওই গোয়ালেই খেতে চললাম তাহলে।
প্রণব ধীরে ধীরে হাঁটা
দেয়। ওর চলে যাবার দিকে তাকিয়ে মনামির একটু মায়াও হয়। একবার মনে হয় ওকে ডাকে। আজ ও
টিফিনে ফ্রায়েড রাইস এনেছে। দুজনে ভাগ করে না হয় খেত। না: থাকগে - ওপাশের টেবিল
থেকে জ্যাক টা আবার হাঁ করে এদিকেই তাকিয়ে আছে।
দুদিন পরের কথা। মাইকের
ঘরে প্রণবের ডাক পড়েছে। মাইক ওকে এত জোরে জোরে বকাবকি করছে যে দরজা বন্ধ থাকা
স্বত্তেও কিছু কিছু আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
ও পাশ থেকে জ্যাক বলল -
- Oh God! Pronob is in big trouble!
*********************
সমীর অফিসের কাজে দুদিন
হল বাইরে। আজ ফেরার কথা। মনামি অন্য দিনের চেয়ে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে রওনা
দিলো। ঘরে বিশেষ কিছু রান্না নেই। চটপট special কিছু একটা করে ফেলবে।
ঘন্টা খানেক পর দরজায় বেল! ওই সমীর এলো বোধহয়। মনামি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলেই
দেখে প্রণব। চোখমুখ লালচে। ওর অবস্থা দেখে মনামি সরে দাঁডিয়ে ওকে ভেতরে আসতে দিলো।
প্রণব একটু ভাঙা ভাঙা গলায় বলল -
- আজ মাইক আমার সংগে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। এত
অপমানিত আমি জীবনেও কখনও হইনি। যাক্ - এই চাকরি আমি ছেড়ে দেবো। এমনিতেই
জেনিফার আমাকে অনেক দিন ধরে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যেতে বলছে। ওর বাবা মা এখন আর
নেই। ও বিশাল সম্পত্তি inherit করেছে। ও চায় ওখানেই settle
করতে।
- এতো খুব ভালো কথা। তুমিই বা কতদিন আর এখানে একা
একা থাকবে।
- তুমি - তুমি বলছো একথা! জানো তোমার জন্যে কাজে
মন দিতে পারিনা - তোমার জন্যে এখানে পড়ে আছি, অস্ট্রেলিয়া যাবার
কথা ভাবতে পারিনা। তুমি জাননা - আমি তোমার জন্যে পাগল! তোমার জন্যে আমার
সর্বনাশ হয়েছে। সব - সব তোমার জন্যে।
মনামি অবাক হয়, বলে -
- আমার জন্যে? আমি কি
করলাম!
- কি করলাম মানে? আমাকে নাচিয়ে
এখন তুমি ন্যাকা সাজছ?
মনামি এখন রাগে কাঁপছে - কিছুক্ষণ আগেও প্রণবের জন্যে ওর যে একটা মায়া
হচ্ছিল তা এখন পুরোপুরি গায়েব।
কোন রকমে বলতে পারল -
- আমি … আমি তোমায় নাচিয়েছি? এসব অভদ্র কথা কেন বলছো? তুমি … তুমি একদম ভুল
বুঝেছ আমাকে।
- ভুল বুঝেছি ? আমি কাঁচা
ছেলে? বাড়িতে ডেকে আমার প্রিয় খাবার রান্না করে খাওয়ানো,
আমার জন্মদিন মনে রেখে gift কিনে দেওয়া।
অফিসের ছুটির পরেও ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে আমার সংগে কফি খাওয়া!
- আমি …...আমি তো তোমাকে
বন্ধুর মতো দেখেছি!
- বন্ধু - my foot ! একটা
ছেলে আর একটা মেয়ের মধ্যে আবার বন্ধুত্ব কি!
- প্রণব - তুমি এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও।
আমি কোনদিনও আর তোমার মুখ দেখতে চাইনা।
এই সময় দরজায় বেল এর
আওয়াজ, তারপর চাবি ঘোরানোর শব্দ। সমীর বাড়ি ফিরলো। আওয়াজ পেতেই
প্রণব একটা অদ্ভুত কান্ড করে বসলো। মনামিকে জোর করে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করতে করতে
বলতে লাগলো -
- আমি যাবোনা আমি যাবোনা কিছুতেই যাবোনা।
সমীর এক মুহূর্তর জন্য হতভম্বের মতো দাঁডিয়ে রইলো - তারপর প্রণবের হাত ধরে
জোরে টান দিয়ে বললো -
- কি হচ্ছেটা কি প্রণব! Leave
her alone !!
- তাই যাচ্ছি!
প্রণব ঝড়ের মতো বেরিয়ে গেলো।
মনামি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। সমীর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে -
- তুমি একটু শান্ত হও - শান্ত হও দেখি। আমি পরে সব
শুনবো।
পর দিন মনামি অফিস যায়নি। তার পর দিন কাজে গিয়ে শুনলো, প্রণব নাকি কাজে ইস্তফা দিয়েছে। মনামি মনে মনে একটা
স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। বিকেল চারটে নাগাদ মিঃ ঘোষ ওকে ঘরে ডেকে পাঠালেন। বললেন -
- যাবার আগে ও সবার কাছে তোমার নামে আজেবাজে কথা
বলে গেছে। আমি তোমাকে সাবধান করে দিলাম, কেউ তোমায়
কিছু বলবেনা আর বলতে এলেও তুমি কোন কথা কানে তুলোনা। আমি লোক চিনি, আমি জানি তোমার কোন দোষ নেই।
মনামির চোখ ভর্তি জল। কোন
রকমে মি: ঘোষকে thank you বলে নিজের
জায়গায় এসে বসে থাকলো - কম্পিউটারের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
দিন সাতেক পরের কথা। মনুদির ফোন। বললেন -
- এসব কি শুনছি বল্ তো মনামি?
- কি ব্যাপার মনুদি?
- শোন্ - এই শনিবার বাড়িতে কিছু লোকজনকে খেতে
ডেকেছিলাম। প্রণবও এসেছিলো। যেখানে ছেলেরা বসেছিলো সেখানে প্রণব নাকি রসিয়ে
রসিয়ে তোর নামে অনেক বাজে বাজে নোংরা কথা বলেছে। আমার বর পরে আমাকে সব বললো।
আমি তো শুনে হাঁ - একটা কথাও বিশ্বাস করিনি।
মনামি কেঁদে ফেললো। বললো -
- বিশ্বাস করো মনুদি, ওর বোধহয় মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমি কি করি ! এবার
Defamation এর case করবো ওর নামে।
- ওকে আর পাবি কোথায় - সে তো বউ এর কাছে
অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছে।
সমীর বাড়ি ফিরে সব কথা শুনে গম্ভীর হয়ে রইলো।
******************
মনামি আর প্রণবকে নিয়ে
গল্পের ডালপালা ছডাতে লাগলো। পিকনিক বা পুজোয় মনামি আর যেতে চায়না, ওর মনে হয়, লোকে ওর দিকে বাঁকা চোখে
তাকাচ্ছে। সমীর একাই যেতো, কিন্তু ওকে একা পেয়ে অনেকে
ঠাট্টার ছলে ওকে অনেক কথা শোনায়, অনেকে সরাসরি জিগেস করে।
আস্তে আস্তে ও কেমন মনমরা হয়ে পড়লো।
মাস ছয়েক পরে একদিন সমীর মনামিকে মুখামুখি বসিয়ে বললো -
- মনামি, কি সত্যি আর
কি মিথ্যে আমি জানিনা, জানতে চাইওনা, তবে কথায় বলে, যা রটে তার কিছুটা তো বটে। আমি এ ভার আর নিতে পারছিনা। আমাদের আলাদা
পথে যাওয়াই ভালো।
- তার মানে? কি বলছো তুমি
সমীর?
- তার মানে আমি divorce চাই।
- এতো সহজেই হার মানলে? বাজে লোকের বাজে কথা তুমিও বিশ্বাস করলে?
- আমি তোমাকে বিশ্বাস করবার অনেক চেষ্টা করলাম -
কিন্তু কিছুতেই পারলামনা।
আশ্চর্য।
সতেরো বছর বয়েস থেকে যার প্রতি মনামি একনিষ্ঠ থেকেছে, সেও আজ
ওকে বিশ্বাস করতে পারছেনা! পরদিন সমীর দুটো সুটকেসে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্র আর
কাপড় জামা নিয়ে বাড়ি ছাড়লো। যাবার সময় বলে গেলো –
- আমায় ক্ষমা কোরো।
মনামি মুখখানা শক্ত করে
দাঁডিয়ে থাকলো। না ক্ষমা সে করবেনা। সে প্রণবকেও ক্ষমা করেনি আর সে সমীরকেও ক্ষমা
করবেনা। যে দোষ সে করেনি, তার জন্যে সে কেন মাথা
নীচু করে থাকবে? সে মেয়ে বলে? না,
আর সে মুখ লুকিয়ে বেড়াবেনা - এবার থেকে আপন স্বমহিমায় সে মাথা
উঁচু করে বাঁচবে। যতদিন তার চাকরি আছে - তার কারোর পরে নির্ভর করার দরকার নেই।

No comments:
Post a Comment