Thursday, July 23, 2020

মেনকার দুঃখ



এবার আমার উমা এলে বলবো সবই খোলাখুলি
মনের মাঝে এত দিনের জমিয়ে রাখা কথাগুলি ।

তোমার বাবা গিরিরাজের বয়স তো আর কম নয় !
Retire করে আয় কমেছে করলো খানিক নয় ছয়
টাকাকড়ি ভাইটি তোমার উড়নচণ্ডে মৈনাক
বলতে গেলে মহাভারত সেসব কথা না হয় থাক

মহেশ্বরের ছত্র-ছায়ায় তুমি মাগো আছো সুখে ;
অন্নপূর্ণা হয়ে তুমি অন্ন যোগাও সবার মুখে
Talented সব ছেলে মেয়ে, বড় বড় চার চারটি
বুড়ো বুড়ির খবর নিতে আসেওনা কেউ একবারটি
বাঙালিদের আবদারেতে সম্বৎসরে একটিবার -
বাপের বাড়ি visit কর  - week end দেখে দিন তিন চার

সঙ্গে আসে ছেলেমেয়ে, ওরাতো আর ছোটটি নেই -
বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেল, move out করার নামটি নেই
লোকের মুখে শুনি প্রায়ইলক্ষীর নাকি ভালো বিয়ে
শ্রী জনার্দন স্বামী তাহার সবই ভালো, তবে ইয়ে
কাজের মধ্যে বসে শুধু লক্ষী করেন পদসেবা,
এটা কেমন  Life style ! সেই কথাটা বলে কেবা !

গণপতি বাবাজীবন, health এর দিকে নজরই নেই
করে সবাই হাসাহাসি, ওই ভুঁড়ির দিকে তাকালেই
ফুল-বাবুটি কার্তিকেয় পা বাড়িয়ে আছেন যেন,
হলেই কোথাও মারামারি, উনি সদাই ready জেনো
"অন্য পাড়ার" মেয়েরা সব ওকেই নাকি পূজো করে?
মন্দ লোকের কাজ নেইকো মন্দ কথা বলে মরে

ওরই মধ্যে সরস্বতী- শান্তশিষ্ট নাতনী আমার,
দেবী তিনি লেখা পড়ার, শিল্প এবং সা রে গা মা র
ওসব এখন obsolete, চলছে লারেলাপ্পা গান -
লেখাপড়ার নাম নেইকো, six figure টি আগেই চান
 লক্ষী ছাড়া, আর কারো কদর নেইকো তেমন মর্ত ধামে
দুর্গা পূজো করছে বটে, কেবল ফুর্তি করার নামে ।

আগে আগে সারা বছর কাটতো শুধু আশা নিয়ে –
উমা আমার আসবে ঘরে সোনার নূপুর পায়ে দিয়ে ।
ঝলমলিয়ে ঊঠবে হেসে গিরিরাজের আঁধার গেহ
চারটি দিনের তরে ও মা । দুখিনি এই মায়ের স্নেহ
দিতাম তোমায় উজাড় করে। সেদিন এখন বহু দূরে
তুমিও মাগো পালটে গেছো, আমরা বাজি বেসুর সুরে ।

বাড়লো যেমন family তোমার, আমরা দুজন হলাম বুড়ো –
অত জনের বাসমতী চাল, পাঁঠার মাংস, মাছের মুড়ো
কোথায় যে পাই! এখন যে তাই মহালয়ার পরে পরেই -
আমার বুকে palpetition, গিরিরাজ তো পড়েন জ্বরেই ।

বলবো আমি আমার কথা – দুঃখ তুমি পাও বা না পাও –
সবার মেয়ে মাকে দেখে, তুমি তো মা ফিরেও না চাও ।
বলবো এসব গৌরী মাকে, আমার মনের যত কথা –
মেয়ে আমার বুঝবে না কি মা মেনকার মনের ব্যথা? 







No comments: